মসজিদ ফর ডেভেলপমেন্ট কি ও কেন ?
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর পবিত্র কুরআন উল কারীমে বলেছেন "কোনো জাতির ভাগ্য ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না সেই জাতি ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করে।
আজ ভারত তথা বাংলার মুসলমান জন গোষ্ঠী সার্বিক ভাবে একটি পশ্চাৎ পদ জাতিতে পরিণত হয়েছে। কয়েকটি মিশন খুবই ভালো কাজ করছেন শিক্ষা ক্ষেত্রে। তাদের প্রচেষ্টায় কিছুটা হলেও আলোর দেখা গেছে। কিন্তু তাদের আয়োজনকে ছোটো না করেও বলা যায় যে, বর্তমান অবস্থা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। আমাদের সিংহভাগ শিশুদের ছোটো থেকেই শিক্ষার ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, ফলত মিশন গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে অপরাগ হচ্ছে। এমনকি সাধারণ স্কুলেও ফলাফল খারাপ হচ্ছে - প্রথম জেনারেশনের শিক্ষার্থীদের। তাদের বাবা মা হয়তো নিরক্ষর বা পারিবারিক আয় রোজগারের চাপে বাচ্চাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারে না। এই সমস্ত শিশুদের জন্য মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলে আশা করা যায় কিছুটা হলেও পরিবর্তন হবে।
এছাড়াও মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমে বুনিয়াদী ইসলামী শিক্ষা দেওয়া হবে, ফলে সকল মুসলিম শিশু ইসলামী শিক্ষাও লাভ করার মাধ্যমে তার প্রাত্যহিক জীবনে ইসলামী আকিদা ও আচরণ প্রতিফলিত হবে।
অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে যদি একটু মনোযোগ দিয়ে দেখি, দেখবো মুসলিমদের জন্য কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ বিষয় সুদের জালে আজ প্রায় 98 শতাংশ পরিবার জড়িয়ে আছে। অথচ আমাদের সমাজের তথা রাজ্যের অনেক মুসলমান যাকাত প্রদান করেন। দান-সদকা করেন। তারপরও কেন মুসলমান সমাজের এই অবস্থা ? আমরা গভীর অনুসন্ধান করে দেখেছি যে, সমাজে সংগঠিত কোনো ব্যবস্থা নেই যেখান থেকে মানুষ প্রয়োজনে কর্জে হাসানা অর্থাৎ বিনা সুদে ঋণ পেতে পারে। আমরা মসজিদ ভিত্তিক ইসলামী ব্যাঙ্কের আদলে যদি একটি করে ফান্ড গঠন করতে পারি যে গুলো ঐ মসজিদের মুসল্লিদের একটি বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হবে। সাপ্তাহিক ভাবে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর দুই ঘণ্টা লেনদেন হবে। তাহলে ধীরে ধীরে সুদ মুক্ত ইসলামী সমাজ তৈরী করা সম্ভব হবে।
আপাতত এই দুই উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা শুরু করছি একটি আন্দোলন, যে আন্দোলনের নাম হলো মসজিদ ফর ডেভেলপমেন্ট।
এখন অনেকেই বলতে পারেন আপনাদের এই উদ্যোগ যে 100 শতাংশ সফল হবে, তার গ্যারান্টি কি? কিম্বা এখানে যে অর্থনৈতিক দূর্নীতি হবে না তার গ্যারান্টি কি?
এক্ষেত্রে আমাদের বলার কথা একটাই, আল্লাহ ভরসা। আমরা পশ্চিম বঙ্গের প্রতিটি জেলার দিকে তাকালে দেখতে পাবো এত সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যেও কিছু মানুষের পরিচালনায় মাদ্রাসা গুলো ক্রমশ উন্নতি করছে। আপনারা বলতে পারেন যে মাদ্রাসা গুলো যখন উন্নতি করছেই তখন আবার নতুন করে মসজিদ ভিত্তিক কার্যক্রম দরকার কেনো? মাদ্রাসা আছে বলেই এখনও সমাজে ইসলামী কিছু রীতি নীতি আছে। কিন্তু সেগুলোও চলে অনেক পুরনো দিনের সিলেবাস অনুসারে। তবে বর্তমানে মাদ্রাসা গুলোও তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় সিলেবাসে পরিবর্তন আনছে।
এখন আরও একটি প্রশ্ন হতে পারে যে, এত কিছু থাকতে মসজিদ কেন? আমাদের অনেক মুসলিম গ্রাম আছে যেখানে মসজিদ ছাড়া আর কোনো ইসলামী প্রতিষ্ঠান নেই। সেই সমস্ত গ্রামে যদি নতুন করে জমি নিয়ে স্কুল বা মাদ্রাসা করতে যাওয়া হয় তাহলে তার জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু মসজিদ তো আছেই সেটাকেই যদি আমাদের সমাজের শিশুদের শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয় তাহলে অসুবিধা কোথায়?
আপনাদের মতামত কামনা করছি।